হাওজা নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের খোরাসান রাযাভি প্রদেশে নিযুক্ত ওলী-ই-ফকিহের প্রতিনিধি আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আহমদ আলমুল হুদা বলেছেন: হযরত ফাতিমা যাহরা (সা.)-এর জীবনধারা হলো ঔদ্ধত্য ও অন্যায়ের (استکبار) বিরুদ্ধে ঈমানদারদের প্রতিরোধের এক সুস্পষ্ট ও বাস্তব উদাহরণ। ইসলামী উম্মাহর উচিত তাদের প্রতিরোধের কৌশল এই জিহাদের যুক্তি ও দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই আহরণ করা।
মাশহাদে অবস্থিত জামি'আ উলূমে ইসলামিয়া রাযাভি-তে আয়োজিত আইয়ামে ফাতিমিয়া উপলক্ষে এক শোকসভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি বলেন,
হযরত ফাতিমা যাহরা (সা.) এমন এক মহীয়সী নারী, যিনি সকল গুণ ও মর্যাদার প্রতীক। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন: যদি সমস্ত ভালো গুণাবলি এক ব্যক্তিত্বে একত্র করা হয়, তবে সেই ব্যক্তিত্ব হবেন ফাতিমা (সা.)।
তিনি আরও বলেন, হযরত যাহরা (সা.) শুধু গুণ ও মর্যাদার প্রতীকই নন, বরং সমগ্র মুমিন সমাজের জন্য, বিশেষ করে আহলে বাইতের (আ.) প্রেমিকদের জন্য তিনি শিক্ষা ও পথনির্দেশের উৎস।
আয়াতুল্লাহ আলমুল হুদা ব্যাখ্যা করেন,
হযরত ফাতিমা (সা.)-এর সংগ্রামের উদ্দেশ্য শুধু “ফাদাকের দাবি” ছিল না; বরং তাঁর মূল লক্ষ্য ছিল ইমামতের ব্যবস্থাকে বিকৃতি থেকে রক্ষা করা এবং নেতৃত্বকে ওহির (আল্লাহর প্রকাশিত বার্তা) পথে অবিচল রাখা।
তিনি বলেন, যদি ফাতিমার আন্দোলনের প্রেরণা কেবল বস্তুগত বা পার্থিব স্বার্থ হতো, তাহলে খুতবা-এ-ফাদাক ও তাঁর আত্মত্যাগমূলক প্রতিরোধের অর্থ বোঝা সম্ভব হতো না।
তিনি আরও বলেন, ফাদাক আহলে বাইতের জন্য একটি সামাজিক ও কল্যাণমূলক ভূমির মালিকানা ছিল; কিন্তু সাইয়্যিদার (সা.) সংগ্রামের মূলকেন্দ্র ছিল ওলায়াতের (আল্লাহপ্রদত্ত নেতৃত্বের) প্রতিরক্ষা। তাঁর দৃষ্টিতে, ইমামত হলো ওহির ধারাবাহিকতারই একটি ব্যবস্থা, এবং উম্মাহর নেতৃত্বের বৈধতা কেবল ওহির পথ থেকেই আসতে পারে।
শেষে আয়াতুল্লাহ আলমুল হুদা বলেন, হযরত ফাতিমা (সা.) বাস্তব জীবনে দৃঢ়তা ও অধ্যবসায় প্রদর্শন করেছেন; তিনি নিজের অবস্থানে অবিচল থেকেছেন এবং শেষ পর্যন্ত শাহাদাত পর্যন্ত ধৈর্য ও স্থিতিশীলতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
এটাই “সিদ্দিকা তাহিরা”-এর জীবনধারা-যা উম্মাহকে প্রতিটি তাগুতি (অত্যাচারী ও শয়তানি) শক্তির বিরুদ্ধে জিহাদ ও প্রতিরোধের শিক্ষা দেয়।
আপনার কমেন্ট